বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, দুর্নীতি দূর করতে হলে দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্বের প্রয়োজন। যারা ক্ষমতায় গিয়ে টানা তিনবার দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছে, তাদের দ্বারা দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে না। যারা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাদের দ্বারা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে না। বরং তারা কোনোভাবে ক্ষমতা দখল করতে পারলে দেশকে আবারও দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করবে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে। মানুষ নিজের ঘরে শান্তিতে ঘুমাতেও পারবে না।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ছিল—বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এবং ইনসাফ ও ন্যায়বিচার কায়েম করা। জামায়াতে ইসলামীর শুরু থেকেই এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। দলটি সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নৈতিক, আদর্শিক ও দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব গড়ে তুলেছে। এর জীবন্ত প্রমাণ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ। তাঁরা উভয়েই ৩টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তাদের দায়িত্ব পালনকালে কারও পক্ষে ২ পয়সার দুর্নীতির অভিযোগও করা সম্ভব হয়নি।


মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সময় যেখানে দুর্নীতির দায়ে প্রায় সব রাজনৈতিক নেতাকে কারাবরণ করতে হয়েছে, সেখানে জামায়াতের কোনো এমপি-মন্ত্রী কিংবা নেতাকর্মী দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হননি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দাঁড় করাতে পারেনি, কারণ জামায়াতে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব নেই।
নারীর অধিকার নিয়ে জামায়াতের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। নারীদের জন্য আলাদা কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করা হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক—নারী কিংবা পুরুষ—সমান অধিকার ও মর্যাদা পাবে। ইসলামই একমাত্র মতবাদ যেখানে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও সুরক্ষা বাস্তবভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্য কোনো মতবাদ বা আইনে এসব নিশ্চিত হয়নি, এর প্রমাণ গত ৫৪ বছরের অভিজ্ঞতায় পাওয়া যায়। নতুন বাংলাদেশে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সবার আগে নারীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।


তিনি আরও বলেন, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। বরং রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে সকল ধর্মের মানুষ সমান মর্যাদা ও অধিকার পাবে। উপস্থিত নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা কেউ আমার বোন, কেউ আমার মায়ের মতো। আপনাদের সহযোগিতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনকে বাংলাদেশের মধ্যে মানবিক ও কল্যাণরাষ্ট্র গঠনের দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।”
তিনি দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশবাসীকে নতুন বাংলাদেশ গঠনে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সভা ও সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন:

সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর শাখার সভাপতি এনায়াতুল্লাহ এবং পরিচালনা করেন সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, পৌর জামায়াতের আমীর হাফেজ গোলাম রাব্বানীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সভা শেষে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৩ জন নারীর মাঝে ১৩টি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।