বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত সাবেক প্রীতি সমাবেশ ২০২৫ এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। সেখানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, গত ৫ আগস্টের পরেই আমাদের সব অর্জন হয়ে গেছে একথা বলার কোনো সুযোগ নেই। ভুলে গেলে চলবে না, একের পর এক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা আমাদের করতে হতে পারে। সকল ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশবাসীকে সাথে নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। দেশে চলমান পরিস্থিতিতে গত রাতে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটা সফট স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেখানে আমাকে বিদ্রুপ করে মন্তব্য করা হয়েছে। পরবর্তীতে অনেকে বলেছেন বিষয়টি ঠিক আছে, তবে অন্য কেউ বললে ভালো হতো। সুতরাং সবার আগে ভালো কিছু কেন আমি বলবো না! ভালো কথাটা সবার আগেই বলা উচিৎ। যেকোনো পরিস্থিতিতে অস্থিরতা দেখানো ঈমানের পরিচয় বহণ করে না। দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এখনই সবাইকে সচেতন থেকে সামনে অগ্রসর হতে হবে। দেশটাকে ধাক্কা দিয়ে একদিকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আমরা কাউকে দিতে চাই না।


আজ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী আয়োজিত প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতি হেলাল উদ্দিন রুবেল এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি হাফেজ দেলোয়ার হোসাইন এর সঞ্চালনায় প্রীতি সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক শাহ মাহফুজুল হক, সাবেক কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক শাহিন আহমেদ খান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল হক মিসবাহ, কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা কার্যক্রম সম্পাদক আলাউদ্দিন আবির এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সাবেক সভাপতিবৃন্দ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই ভূখন্ডে দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমাদের রাহবারগণ জীবন দিয়েছেন। আমরা তাদের রেখে যাওয়া আদর্শকেই ধারণ করে সামনে এগিয়ে যায়। রক্ত ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে ছাত্রশিবির এদেশে যা অর্জন করেছে, সেটাই ২০২৪ এ এসে একটা বিস্ফোরণ ঘটেছে। সে ঘটনার মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেশের উপরে চেপে বসা ফ্যাসিবাদের কবল হতে সকলকে মুক্ত করেছেন।

বিশেষ অতিথি মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আমরা সাবেক শব্দটাকে কুরআনের দৃষ্টিতে দেখলে অনেক মর্যাদা সম্পন্ন হিসেবে পায়। ছাত্রশিবিরে সাবেক বলতে কিছু নেই বরং আমরা আরও অগ্রগামী শিবির এই পরিচয় দেওয়া জরুরি। অগ্রবর্তি ব্যক্তি হিসেবে সকল শিবিরের সদস্যদের দায়িত্ব অনেক বেশি। যিনি সকল কাজের আগে থাকবেন সেই অবস্থানেই আপনারা রয়েছেন।

বিশেষ অতিথি নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ছাত্রশিবির এই জাতিকে যা উপহার দিয়েছে, দেশে আর কোনো গোষ্ঠী তা করতে সক্ষম হয়নি। সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক নৈতিকতা সম্পন্ন নেতৃত্ব খুঁজে পাওয়া যায় কেবল ছাত্রশিবিরেই। দেশের স্বাধীনতার ৫৪তম বছর অতিক্রম করছি আমরা। ৫ আগস্টের ছাত্র জনতা যে বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ চায় স্লোগান দিয়েছে, উই ওয়ান জাস্টিস ন্যায়বিচার আমরা চায়, ইনসাফের বাংলাদেশ আমরা চায়। এজন্যই ছাত্রশিবিরের যে কর্মসূচি আছে তা আর কারো মাঝে পাওয়া যায় না। আগামীর বাংলাদেশকে গড়তে ছাত্রশিবিরের বিকল্প নেই।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শিক্ষাঙ্গনে বহু ছাত্র সংগঠন রয়েছে কিন্তু ছাত্রশিবির যে আদর্শের আহবান, ছাত্র সমাজের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে যা আর কেউ করতে সক্ষম হয়নি। ছাত্রশিবির তার কর্মসূচি নিয়ে এদেশের প্রতিটি ভালো কাজে এগিয়ে থাকবে।