জামায়াত নেতা আবুল হোসেন খান রাজনসহ নেতাকর্মীদের গুম, বেআইনীভাবে আটক, গণগ্রেফতার বন্ধ ও অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
আজ সোমবার দেয়া যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন, জামায়াত নেতা আবুল হোসেন খান রাজনকে গত ২৫ জুলাই রাত ৮:৩০মিনিটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তার রাজধানীর নিজ বাসা হতে ধরে নিয়ে যায়। এসময় তারা বাসার সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যায় এবং সিসি ক্যামেরার পার্টসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাংচুর করে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৪ দিন যাবত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে থাকলেও তাকে আদালতে বা থানায় সোপর্দও করা হয়নি, যা সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের চরম পরিপন্থী।
নেতৃদ্বয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন আইন পরিপন্থী মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং তাকে অনতিবিলম্বে নিজ পরিবারের নিকট অথবা আদালতে হাজির করার আহ্বান জানান।
এছাড়াও রাজধানীজুড়ে গণগ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন, ধানমন্ডি থেকে ছেলেসহ জনাব রফিকুন্নবী, ওয়ারী থেকে নেজামত আলী, কামরাঙ্গীরচর থেকে আবীর হোসেন ও আইয়ুব আলী, যাত্রাবাড়ী থেকে ছেলেসহ শাজাহান খান, শাজাহানপুরে হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে বের হওয়ার সময় মাওলানা মাহমুদুল হাসান সহ শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার, হয়রানীর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না পথচারী, দিনমজুর, ছাত্র, শিক্ষকরাও। এ সময় সংশ্লিষ্টদের পরিবারকে হেনস্তা করা হয়েছে মর্মে নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন। তারা অবিলম্বে হয়রানী বন্ধ করে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবী করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে উঠিয়ে নিয়ে দেশের নাগরিকদের নিখোঁজ করে রাখা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সরকার কোটা সংস্কারের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অরাজনৈতিক আন্দোলনকে এখন রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। প্রতিদিনই জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দল মতের অসংখ্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। বাসায় বাসায় তল্লাশীর নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানী করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ভাংচুর চালিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনী কার্যকলাপ সংঘটিত করা হচ্ছে। সরকার ঢাকা মহানগরীতে চিরুনি অভিযানের নামে হাজার হাজার মানুষকে আটক করে কারাগার ভর্তি করছে।
নেতৃদ্বয় এধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের নিরাপত্তায় সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। একই সাথে ঢাকাবাসীকে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এহেন স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।