বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, হজ্ব একটি মৌলিক ইবাদত। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অতিব গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হজ্ব পালন করা। মহান আল্লাহ যাদেরকে আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ও শারীরিকভাবে সুস্থ রেখেছেন তাদের জন্য হজ্ব অবশ্যই পালনীয় বা বাধ্যতামূলক ফরজ ইবাদত। হজ্ব একটি বড় ফরজ ইবাদত, এখানে অনেক কর্মসূচি রয়েছে, যা একজন হাজ্বীকে পর্যায়ক্রমে সম্পাদন করতে হয়। বাংলাদেশ থেকে যারা হজ্বে যান তাদের অধিকাংশ সঠিক নিয়ম-কানুন না জানার জন্য হজ্বব্রত পালনের সময় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। বিভিন্ন কাফেলা বা সহযোগী প্রতিষ্ঠান গুলো সম্মানিত হাজ্বীদের হজ্বের মৌলিক বিষয় গুলো প্রশিক্ষণ দিয়ে এই ফরজ ইবাদত পালনে সহযোগিতা করে থাকেন। আমরা সে সকল প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানায়, হজ্ব পালনের প্রকৃত বিধান যা কুরআন ও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত তা শিক্ষা প্রদান করে হাজ্বীদের হজ্ব পালনে সহযোগিতা করবেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা চাই, হজ্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ ইবাদত যেন আল্লাহ আমাদের সকলের কবুল করেন।
১১ জুন ২০২২ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত আল্লাহর মেহমান হজ্ব যাত্রীদের সম্মানে হজ্ব গাইড লাইন শীর্ষক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানি, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য হাফিজুর রহমান সহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, হজ্ব কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে এ ইবাদত পালন হওয়া খুব জরুরি। প্রিয় রাসূল (সা) হজ্ব পালনে যেসব নির্দেশনা দিয়ে গেছেন সেভাবেই সবার হজ্ব পালন হওয়া দরকার। সফল হজ্ব বা হজ্বে মাবরুর আল্লাহর নিকট কবুল হওয়ার জন্য যথাযথ নিয়ম গুলো হাজীদেরকে অনুসরণ করতে হবে, যাতে করে হজ্ব পালন শেষে আমরা নিজেকে পুতপবিত্র করতে পারি। আমাদের হজ্ব পালন করা যেন শুধুমাত্র কোনো আনুষ্ঠানিকতা না হয়। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার নৈকট্য লাভের মাধ্যম, যা আল্লাহর আদেশ। সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে হজ্ব পালনের মাধ্যমে মূলত আল্লাহর কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেটা সকল হাজ্বীদেরকে মনে রাখতে হবে।
ড. খলিলুর রহমান মাদানি বলেন, হজ্বের ফরজ ৩টি ইহরাম বাধা, উ’কুফে আ’রাফা (আরাফাতের ময়দানে অবস্থান), তাওয়াফুয্ যিয়ারাত। ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হল হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমান, নামায, যাকাত ও রোযার পরই হজ্বের অবস্থান। হজ্ব মূলত শারীরিক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর হজ্ব পালন করা ফরয।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, যারা হজ্বের সফরের সৌভাগ্য লাভ করেন তারা প্রকৃত আল্লাহর মেহমান। তাই প্রত্যেকের উচিত সর্বদা আল্লাহর আনুগত্য ও তার ইশক-মুহববতের অনুভূতি নিয়ে সেখানে অবস্থান করা। বায়তুল্লাহ ও আল্লাহর অন্যান্য নিদর্শনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। হজ্ব অবস্থায় পরিবার ও নিজ দেশের কল্যাণে বিশেষ দোয়া করা।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হজ্ব পালনে কবুল করেছেন তারা অবশ্যই সম্মানিত। তাদেরকে এটাও মনে রাখতে হবে এই হজ্ব পালনের বাহিরেও সামগ্রিক জীবনে আমাদের আরও কিছু মৌলিক ইবাদত ও দায়িত্ব মহান আল্লাহ প্রদান করেছেন। সেসব ইবাদতেও যেন আমরা লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক বলার যোগ্যতা অর্জন করি। খেয়াল রাখতে হবে, হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে যেন সকল পর্যায়ে এটা আমাদের দাওয়াতী কাজেরও অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়।
অনুষ্ঠানে আল্লাহর মেহমান সম্মানিত হাজ্বীদেরকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে বিশেষ সৌজন্য উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।